আদমজী এক্সপ্রেস রিপোর্ট: সিদ্ধিরগঞ্জে যুবলীগ ক্যাডার হত্যা মামলার আসামি সাব্বির আহম্মেদ প্রধান (৪৮)কে গ্রেপ্তার করেছে থানা পুলিশ। রবিবার ভোর রাতে অভিযান চালিয়ে সিদ্ধিরগঞ্জের নাসিক ৬নং ওয়ার্ডস্থ গোদনাইল বার্মাশীল এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত সাব্বির আহম্মেদ প্রধান গোদনাইল বার্মাশীল এলাকার মৃত হাসান আলী প্রধানের ছেলে। একটি সুত্রে জানা যায়, নারায়ণগঞ্জ মহানগর মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক আয়শা আক্তার দিনা গ্রেপ্তারকৃত যুবলীগ ক্যাডার হত্যা মামলার আসামি সাব্বির আহম্মেদ প্রধানকে ছাড়িয়ে নিতে রাতেই তদবিরে জন্য থানায় ছুটে আসেন থানায়। এক পর্যায় ৩/৪ ঘন্টার মত থানায় তদবির করে ব্যর্থ হয়েছেন আয়শা আক্তার দিনা।
রবিবার (৬ অক্টোবর) সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আল মামুন গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন দুপুরে গ্রেপ্তারকৃত আসামি সাব্বির আহম্মেদ প্রধানকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। হত্যা মামলা যার নং- (২৯) ২২-০৯-২৪। ওই হত্যা মামলার বাদী ফল বিক্রেতা আকরাম জানায়, “বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় ২১ জুলাই সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইল মোড়ে খানকায়ে জামে মসজিদ সংলগ্ন হক সুপার মার্কেটের সামনে আমার ছেলে আরাফাত হোসেন আকাশ (১৬) আমার সাথে ফল বিক্রিতে সহায়তা করছিল। ওই দিন সকাল ১১ টায় মামলার আসামীরা ছাত্রদের আন্দোলন ঠেকাতে গুলি বর্ষণ করে। এতে আমার ছেলে নোয়াখালী জেলার সোনাইমুড়ী উপজেলার ওয়াসেকপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেনীর ছাত্র আরাফাত হোসেন আকাশ নিহত হয়।”
জানা যায়, সিদ্ধির থানা যুলীগের যুগ্ম সাংগঠনিক সম্পাদক সাব্বির আহমেদ সিদ্ধিরগঞ্জ থানা যুব লীগের আহব্বায়ক ৬ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মতিউর রহমান মতির একজন আস্থাভাজন কর্মী। মতির সকল কুকর্মের সাথে সাব্বির জড়িত ছিল। সাব্বিরের বাসা গোদনাইলে অবস্থিত পদ্মা ও মেঘনা জ্বালানি ডিপোর কাছে থাকায় মতির শেল্টারে চোরাই তেলের ব্যবসা নিয়ন্ত্রন করত।
৭নং ওয়ার্ডে অবস্থিত আদমজীনগর এম ডব্লিউ উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ছিল মতি। এ সময় সাব্বির ওই কমিটির সদস্য হয়ে নানা অনিয়ম, ,অব্যবস্থাপনা ও লুটপাট জড়িয়ে পড়ে। তার স্ত্রী লিপি আক্তার ওই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক । নিয়মের তোয়াক্কা না করে স্ত্রীকে বিদ্যালয়ের প্রভাতী শাখায় ভারপ্রাপ্ত সহকারী প্রধান শিক্ষকের পদ দেয়। ৪ বছর যাবৎ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গাজী নাজমুল হুদাকে বিদ্যালয়ে দায়িত্ব থেকে দূরে সরিয়ে রাখার মূল কাজটি সাব্বির করে। এই কাজেও সাব্বির নারায়ণগঞ্জ মহানগর মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক ও নাসিকের সাবেক সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর আয়েশা আক্তার দিনাকে ব্যবহার করে।
বার্মাশীল এলাকার বাদিন্দারা জানায়, র্দীর্ঘ দিন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাতে সাব্বির মতির সাথে নানা অপকর্মে জড়িয়ে পড়ে। গোদনাইল কবরস্থানের জন্য ৬ নং ও ৮ নং ওয়ার্ড থেকে এলাকাবাসী বাৎসরিক চাঁদা দিত। সেই টাকা কবরস্থানের উন্নয়নে না দিয়ে সাব্বির নিজেই আত্মসাৎ করত। মতি এলাকা থেকে পালিয়ে গেলেও সাব্বির দিনার শেল্টারে এলাকায় থেকে যায়। এলাকায় থেকে বিএনপির স্থানীয় কর্মীদের সাথে থেকে মতির ব্যবসা বাণিজ্য ও অবৈধ অস্ত্রের পাহারা দিত। বাসিন্দারা আরো জানায়, মতির অস্ত্র ভান্ডারের তথ্য মতির ভাইগ্না মাসুদ পিতা ইয়াকুব আলী, তেল চোর আশ্ররাফ, অকিল ভুইয়ার ভাতিজা আলআমিন, সাইজদ্দিন মাদবরের ছেলে চোরাই তেল কারবারী মাসুদ পারভেজ ও যুবলীগের মেহেদীর সন্ধানে আছে বলে এলাকায় চাউর আছে । সাব্বিরকে পুলিশ জিগাসাবাদ করলে মতির অবৈধ অস্ত্র ভান্ডারের তথ্য পাওয়া যাবে।